অতিরিক্ত চুল পড়া? জানুন কারণ ও প্রতিকার

অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার আমরা অনেকেই জানিনা। তাই আমরা সবাই এর কারণটি জানার জন্য অনেক খোঁজাখুঁজি করি কিন্তু সঠিক তথ্য খুঁজে পাই না তবে আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদেরকে অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানাবো।
অতিরিক্ত-চুল-পড়ার-কারণ-ও-প্রতিকার
অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ অনেকগুলো হতে পারে যেমন ভিটামিন-জনিত কারণে বা বংশগত কারণে অথবা হরমোনের কারণে হয়ে থাকে তবে এর থেকে রক্ষা পেতে যেই পদক্ষেপগুলো আমাদের নিতে হবে তা জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

পোস্ট সূচীপত্রঃ অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার

অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার

অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আপনি কি জানতে চান? আপনার কি অতিরিক্ত চুল পড়ছে বা অতিরিক্ত চুল পড়া নিয়ে আপনি কি অনেক চিন্তিত? তাহলে আপনার জন্য আমাদের এই আর্টিকেলটি লেখা কারণ আপনি আমাদের আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবেন অতিরিক্ত চুল পড়লে আপনি কোন সমাধান টি ব্যবহার করতে পারবেন বা অতিরিক্ত চুল পড়া কিভাবে থামাতে পারবেন। বর্তমানে আমাদের প্রত্যেকটি মানুষেরই চুল পড়া নিয়ে অনেক সমস্যা দেখা দেয়। 

কারণ কম বেশি প্রত্যেকটি মানুষেরই চুল পড়ার সমস্যা থাকে। আমেরিকার ডার্মালজিস্টের মতে প্রত্যেকটি মানুষের প্রতিদিন প্রায় ৯০ থেকে ১০০ টি চুল পড়া স্বাভাবিক বিষয়। চুল পড়া নিয়ে অনেক কারণ থাকতে পারে সেটাও হতে পারে অতিরিক্ত ঘুমের অভাব বা অতিরিক্ত মানসিক টেনশনের কারণে অথবা বংশগত কারণেও চুল পড়া সমস্যাটি হয়ে থাকে। চুল পড়া সমস্যা নিয়ে তেমন কোন চিন্তার কিছু নেই কারণ অতিরিক্ত টেনশনের কারণে চুল পড়তে পারে, চুলে ক্ষতিকারক কিছু ব্যবহার করার কারণে চুল পড়তে পারে। 

হরমোনের কারনেও চুল পড়তে পারে অথবা নানান ধরনের রোগ রয়েছে যেমন ক্যান্সার ডায়াবেটিস ইত্যাদির কারণে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। কিন্তু এই চুল পড়া থেকে মুক্ত হতে হলে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই প্রয়োজনীয় কারণ যেসব পুষ্টির কারণে আমাদের চুল অতিরিক্ত পড়ে সেইসব পুষ্টির ঘাটতি যদি আমরা পূরণ করতে পারি খাবার খাওয়ার মাধ্যমে তাহলে আমাদের চুল পড়া কমে যাবে। আমাদের শরীরে প্রোটিন বা ভিটামিনের ঘাটতি যখন দেখা দেয় তখন অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়তে থাকে। 

তাই এই প্রোটিন বা ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আমরা প্রতিদিন কিছু প্রোটিন ও ভিটামিনযুক্ত খাবার খেতে পারি যেমন ডিমের কুসুম বাদাম কলা মাশরুম মিষ্টি আলু ইত্যাদি এই সকল খাবার খেলে আপনাদের শরীরের যে সকল ভিটামিন এর অভাবে চুল পড়ে সে সকল ভিটামিন ও প্রোটিন গুলো পরিপূর্ণ হয়ে যাবে এবং চুল পড়া বন্ধ করবে। এবং আপনারা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে টেনশন করেন তাহলে আপনাদের চুল পড়তে পারে তাই অতিরিক্ত টেনশন থেকে মুক্ত থাকতে হবে তাহলে চুল পড়া কমবে। 
এবং আপনাদের যদি অন্য কোন রোগের কারণে চুল পড়ে থাকে তাহলে সব সময় সেই রোগের চিকিৎসা ঠিকমতো করতে হবে তাহলে অতিরিক্ত চুল পড়া থেকে মুক্ত পেতে পারেন। তবে চুল পড়া কমানোর জন্য কিছু জিনিস আপনি ব্যবহার করতে পারেন তাহলে আপনার চুল পড়া কমতে পারে যেমন আপনি যদি বুঝতে পারেন আপনার সামনের দিকে চুলের ঘনত্ব কমে যাচ্ছে তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে যে আপনার অতিরিক্ত চুল পড়ছে। 

আমরা নিচে যে সকল ঘরোয়া উপায়ে আপনাদের চুল পড়া বন্ধ করা যায় সেই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব তাই আমাদের এই কন্টেন্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন তাহলে আপনি আপনার চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে পুরোপুরি সম্পূর্ণভাবে জানতে পারবেন।

ছেলেদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার কি?

বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে ছেলেদের চুল পড়ার সমস্যাটি বেশি দেখাচ্ছে কারণ ছেলেদের অতিরিক্ত মানসিক টেনশনের কারণে চুল পড়া সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে। আরো অন্যান্য কারণে ছেলেদের চুল পড়তে পারে যেমন বলা যায় চুলে ক্ষতি করে এমন কোন তেল ব্যবহার করার কারণে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে আবার বংশগত কারণেও চুল পড়ে যেতে পারে। আবার দেখা যায় যে অতিরিক্ত পুষ্টিয়ানতার কারণে বা ভিটামিন এর পরিমাণ শরীরে কম দেখা দিলে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। 

সেই ক্ষেত্রে আপনি ভিটামিন যুক্ত ও প্রোটিনযুক্ত খাবার বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাতে আপনার শরীরে যে প্রোটিনের ঘাটতি রয়েছে সেই ঘাটতিতে পূরণ হবে এবং আপনার চুল পড়া আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাবে। আবার আপনি চাইলে প্রাকৃতিক যে সমস্ত তেল রয়েছে আমাদের চুলে ব্যবহার করার জন্য সেই তেল গুলো ব্যবহার করতে পারেন তাতে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে এবং নতুন চুল ও গজাবে। সচরাচর দেখা যায় আমাদের চুল পড়লেও পুনরায় আবার চুল গজায় না। 

কিন্তু একটি মানুষের চুল পড়লেও আবার নতুন করে গজানো সম্ভব যদি সে নিয়মিত তার চুলের যত্ন নেয় এবং প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার খায়। সাধারণত পুরুষদের ক্ষেত্রে যদি অনেক বয়স পড়ে হঠাৎ চুল পড়া বেড়ে যায় তাহলে বুঝতে হবে সেটির জিনগত সমস্যা বা বংশগত সমস্যা। কারণ অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে হরমোনের ঘাটতির কারণে মাথার চুল পড়ে যায় বা আপনার বংশের প্রত্যেকটি পুরুষেরই মাথার চুল একটা সময় পর একটা বয়স পরে ঝরে যায় তাহলে বুঝতে হবে এটা আপনার জিনগত সমস্যা। 

তাই বলা যায় ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ করার উপায় গুলোর মধ্যে অতিরিক্ত টেনশন না করা এবং নিয়মিত খাওয়া দাওয়া করা ও প্রাকৃতিক যে সকল উপাদান রয়েছে আমাদের সেসকল উপাদান গুলো আমাদের চুলে ব্যবহার ঠিকমতো করা তাহলে আমাদের ছেলেদের চুল পড়া বন্ধ হয়ে যাবে।

মেয়েদের চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার কি?

বর্তমানে ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরও চুল পড়ার সমস্যাটি অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে তবে মেয়েদের চুল পড়ার কারণ গুলোর মধ্যে সবথেকে গুরুতর কারণ হলো শরীরে হঠাৎ হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মেয়েদের ক্ষেত্রে অনেক বেশি চুল পড়তে পারে। বিশেষ করে দেখা যায় যেসব নারী গর্ভাবস্থায় থাকেন বা প্রেগনেন্সির পরে অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যায় ভোগেন এটা সাধারণত হয়ে থাকে শরীরের হরমোনের পরিবর্তন হওয়ার কারণে। 

আবার দেখা যায় শারীরিক কোন সমস্যার কারণে ও বা জটিল কোন রোগের কারণে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। আবার দেখা যায় চুলের ত্বক যদি অপরিষ্কার রাখা যায় তাহলে সেখান থেকে ইনফেকশন হয়ে অতিরিক্ত পরিমান চুল পড়তে পারে তাই সব সময় চুলের ত্বক পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের সময় বিশেষ করে শরীরের পুষ্টি হীনতার কারণে চুল পড়ে তাই সবসময় ভিটামিন ও পুষ্টি সম্পন্ন প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনার চুল পড়া সমস্যাটি কমে যাবে। 

মেয়েদের বিশেষ করে চুলে অনেক বাইরের তেল জাতীয় কিছু ব্যবহার করার কারণে অনেক সময় চুল পড়ে যায় যা চুলের অনেক ক্ষতি করে তাই চুলে কোন প্রকার বাইরের কিছু ব্যবহার করার আগে সেটা সম্পর্কে সঠিকভাবে তথ্য নিয়ে এবং সেটি প্রাকৃতিক কিনা সেটা সঠিকভাবে জেনে তারপরে ব্যবহার করবেন। মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় চুল এলোমেলো রাখার কারনে বা বারবার চিরুনি ব্যবহার করার কারণেও চুলের ত্বকে অধিক আঘাত লাগার কারণেও অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়তে পারে তাই বারবার চুলে চিরুনি ব্যবহার করা চুলের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে।

অল্প বয়সে অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ কি?

আপনার কি অল্প বয়সে অনেক চুল পড়ে যাচ্ছে এ বিষয়টি নিয়ে আপনি অনেক চিন্তিত আবার আপনি জানতে চাচ্ছেন কিভাবে আপনার এত কম বয়সে চুল পড়ে যাচ্ছে? তাহলে আমাদেরই আরটিকাটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন নিচে আমরা অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে আলোচনা করব। অল্প বয়সে সাধারণত অনেকগুলো কারণে চুল পড়তে পারে তার মধ্যে কিছু কারণ হতে পারে। 

যেমনঃ বংশগত কারণ, হরমোন জনিত কারণ, পুষ্টি জনিত অভাবের কারণে, অতিরিক্ত টেনশনের কারণে, অতিরিক্ত রাসায়নিক দ্রব্যজাতীয় পণ্য ব্যবহার করার কারণে, কিছু রোগের কারণে হতে পারে আবার অতিরিক্ত চুলের যত্ন নেওয়ার কারণেও হতে পারে। 
নিচে কারণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলোঃ

১.বংশগত কারণঃ
যদি আপনার ফ্যামিলিতে কারো অল্প বয়সে অতিরিক্ত চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যাটি থেকে থাকে তাহলে বাকি সদস্য গুলোর ও একই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই যদি আপনার অল্প বয়সে চুল পড়ে যায় তাহলে সেটা কে বলা হয় বংশগত কারণ। তাই আপনার ফ্যামিলিতে যদি কারো অল্প বয়সে চুল পড়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে তাহলে আপনি আগে থেকে সাবধান হয়ে যান এবং চুলের যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করুন।
২. হরমোন জনিত কারণঃ
সাধারণত দেখা যায় পুরুষ ও মহিলাদের চুল পড়লে বা অতিরিক্ত চুল পড়া সমস্যা দেখা দিলে তারা জানে না কি কারণে তাদের অতিরিক্ত চুল পড়ছে তবে চুল পড়ার কারণগুলোর মধ্যে হরমোন জনিত কারণটি বেশিরভাগ মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। কারণ মেয়েদের প্রেগনেন্সির সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে প্রেগনেন্সির পরে অতিরিক্ত মাত্রায় চুল পড়তে পারে। ছেলেদের ক্ষেত্রেও দেখা যায় কোন কোন সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে চুল পড়তে পারে তবে এই কারণগুলোকে সাধারণত হরমোন জনিত কারণে বলা হয়। শরীরে এন্ড্রোজেনর পরিমাণ যদি কম থাকে তাহলে অতিরিক্ত মাত্রই চুল পড়তে পারে।
অতিরিক্ত-চুল-পড়ার-কারণ-ও-প্রতিকার
৩. পুষ্টি জনিত অভাবের কারণঃ
আমাদের সাধারণত চুল পড়ার প্রথম কারণ হিসেবে বলা যায় পুষ্টিগনিত কারণে আমাদের অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়ে। কারন আমাদের শরীরের যদি সঠিক পরিমাণ ভিটামিন ও প্রোটিন না থাকে তাহলে চুলের গোড়া নরম হয়ে যায় এবং চুলের গোড়া পাতলা হওয়ার কারণে অধিক পরিমাণে চুল পড়তে পারে। তাই বলা যায় আপনার যদি অধিক পরিমাণে চুল পড়ে তাহলে আপনি সঠিক পরিমাণ পুষ্টি জনিত খাবার খেতে পারেন বিশেষ করে যেসব খাবারে ভিটামিন সি ও ভিটামিন এ বি জাতীয় উপাদান বেশি রয়েছে সেই সকল খাবার বেশি বেশি খাওয়ার চেষ্টা করবেন তাতে আপনার চুল পড়া বন্ধ করবে এবং চুলের গোড়া শক্ত করতে সাহায্য করবে।

৪. মানসিক টেনসনের কারণেঃ
কোন মানুষ যদি অতিরিক্ত পরিমাণ টেনশন করে বা তার যদি অতিরিক্ত পরিমাণ মানসিক টেনশনের কারণে ঠিকমতো ঘুম না হয় তাহলে তার অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়া সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। তাই কোনো কারণবশত অতিরিক্ত পরিমাণ টেনশন করা যাবে না তাহলে আপনার চুল পড়া সমস্যাটি থেকে দূরে থাকতে পারবেন এবং ঠিকমতো ঘুম পারলে আপনার চুল পড়া বন্ধ হবে।

৫. অতিরিক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের কারণেঃ
আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণ চুলের যত্ন নেন বা চুলে গরম পানি ব্যবহার করেন এবং অতিরিক্ত পরিমাণ স্টাইলিশ কিংবা চুলের হেয়ার স্টাইলিশ প্রোডাক্ট ব্যবহার করেন তাহলে আপনার অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়তে পারে কারণ হেয়ার স্টাইলিশ প্রোডাক্টে অতিরিক্ত পরিমাণ রাসায়নিক দ্রব্য থাকে এতে চুল দুর্বল হয়ে পড়ে এবং অনেক পরিমান চুল পড়তে থাকে।

আশা করি অল্প বয়সে চুল পড়ার কারণ সম্পর্কে আপনার সম্পূর্ণ ধারণা হয়েছে এবং যে সকল কারণগুলোর কারণে আপনার অল্প বয়সে চুল পড়ে যাচ্ছে এ সকল কারণ থেকে দূরে থাকুন এবং অতিরিক্ত চুল পড়া থেকে মুক্ত হন।

চুল পড়া বন্ধ করার ঘরোয়া উপায় কি?

আমরা সাধারণত চুল পড়া বন্ধ করার জন্য নানান ধরনের হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি কিন্তু এই হেয়ার প্রোডাক্টগুলো আমাদের চুলের জন্য যে আরও বেশি ক্ষতিকর সেটা আমরা একবারও বুঝতে পারি না। কারণ বাজারে বেশিরভাগ হেয়ার প্রোডাক্টটি রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা তৈরি আর এর রাসায়নিক দ্রব্য আমাদের চুলের জন্য অনেক ক্ষতিকর হয়তো কিছু সময় চুল পড়া বন্ধ করে কিন্তু চুলের গোড়া অনেক দুর্বল হয়ে যায় পরবর্তীতে আমাদের চুলের আরো বেশি পরিমাণ ক্ষতি করে। 

এবং অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়তে থাকে। তাই সর্বদা চেষ্টা করবেন প্রাকৃতিক কোন কিছু দিয়ে চুলের যত্ন নিতে বিশেষ করে আপনারা চাইলে আপনাদের ঘরোয়া কিছু জিনিস ব্যবহার করে নিজের চুল পড়া বন্ধ করতে পারেন এবং চুলের যত্ন করতে পারেন। আর তাই আজকে আমরা আপনাদেরকে জানাবো কিভাবে আপনারা ঘরোয়া উপায়ে আপনাদের চুলের যত্ন নিবেন এবং অতিরিক্ত চুল পড়া বন্ধ করবেন। নিচে ঘরোয়া উপায় চুল পড়া বন্ধ করার উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ

চুল পড়া বন্ধ করায় নিম পাতার তেলের ব্যবহার

চুল পড়া বন্ধ করায় নিমের পাতার তেল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ চুলের যত্নের জন্য নিমের পাতার তেল ব্যবহার করে আসছে। নিমের পাতায় অতি পরিমাণ ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা আমাদের চুলের গোড়াকে খুবই মজবুত রাখতে সাহায্য করে। নিমের পাতা চুলে ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলের গোড়াও শক্ত হয় আবার চুলের তৈলাক্ত উৎপাদন বন্ধ করে চুল পড়া কমাতে খুবই সাহায্য করে। নিমের পাতার তেল চুল পড়া বন্ধ করায় এর গুরুত্ব অপরিসীমও।
ব্যবহারের নিয়মঃ
দশটা থেকে বারোটা পাতা একসাথে পেটে সম্পূর্ণ রস বের করে নিতে হবে তারপর এই রসের সাথে একটি তেল যেমন নারিকেল তেল মিশিয়ে নিয়ে চুলের গোড়ায় মাসাজ করতে হবে কিছুক্ষণ তাহলেই এটি আপনার চুলের স্কেলে এন্টি ব্যাকটেরিয়া হিসেবে কাজ করবে এবং আপনার চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে।

চুল পড়া বন্ধ করায় পেঁয়াজের রসের ব্যবহার

চুল পড়া বন্ধ করায় পেঁয়াজের রসের গুরুত্ব অনেক কারণ পেঁয়াজের রস নতুন চুল গজাতে অনেক সাহায্য করে। পেঁয়াজের রসে অধিক পরিমাণ এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিঅক্সিডাইস রয়েছে যা আমাদের চুলকে ঘন করতে সাহায্য করে। তাই বলা যায় পেঁয়াজের রস চুলে ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনাদের নতুন চুল গজাতে সাহায্য করবে এবং চুল পড়া থেকে বন্ধ হতেও অনেক সাহায্য করবে।

ব্যবহারের নিয়মঃ
দুইটা পেঁয়াজ নিন এবং সেই পেঁয়াজ দুইটি থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ রস বের করে নিন করার পর সরাসরি আপনি আপনার চুলের গোড়া থেকে শুরু করে চুলের দোগা পর্যন্ত পুরোপুরি মাসাজ করুন এবং মাসাজ করার পরে এক ঘন্টা পরে শ্যাম্পু করুন এভাবে এক মাস ব্যবহার করার পর আপনি নিজেই আপনার চুলের পার্থক্য বুঝতে পারবেন এতে আপনার নতুন চুল গজাবে এবং চুলের গোড়া শক্ত হবে যাতে আর আপনার চুল পড়বে না।

চুল পড়া বন্ধ করার জবা ফুলের ব্যবহার

জবা ফুল একটি প্রাকৃতিক উপাদান তাই জবা ফুলের গুরুত্ব চুল পড়া বন্ধে অপরিসীমও। জবা ফুল প্রাকৃতিক উপাদান তাই আপনি যে কোন ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। জবা ভুল ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার চুলের গোড়া শক্ত হবে এবং নতুন চুল গজাবে আবার চুলের খুশকি রোগ থেকেও মুক্ত করবে। তাই চুলের যত্ন করাই জবা ফুলের গুরুত্ব অনেক তা এতক্ষণে হয়তো আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

ব্যবহারের নিয়মঃ
কয়েকটি জবা ফুল নিন এবং কিছু পরিমাণ নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন তারপর কিছুক্ষণ পর ঠান্ডা হলে আপনার চুলের গোড়ায় এবং চুলে লাগিয়ে নিন এবং আধা ঘন্টা পরে চুলে শ্যাম্পু করে ফেলুন এভাবে কিছুদিন ব্যবহার করার পরে আপনি জবা ফুলের গুনাগুন নিজেই বুঝতে পারবেন।

চুল পড়া বন্ধ করায় তেলের উপকারিতা ও অপকারিতা

উপকারিতাঃ
তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলকে অনেক স্বাস্থ্য উজ্জ্বল দেখায় এবং চুলের শুষ্কতাও কমিয়ে তোলে তবে সেই তেলটি যদি প্রাকৃতিক তেল হয় তাহলে চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলকে বৃদ্ধি করতে অনেক সাহায্য করে। তাই বলা যায় চুল পড়া বন্ধ করতেও তেলের গুরুত্ব অনেক। তবে সেই তেলটি যদি নারিকেল তেল বা সরিষার তেল হয় তাহলে আমাদের চুলের আদ্রতা বজায় রেখে এই তেল গুলো চুলকে অনেক মজবুত রাখে ও শুষ্কতা ভাব কমিয়ে তুলে চুলের স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তোলে।

অপকারিতাঃ
তেলের যেমন উপকারিতা রয়েছে ঠিক তেমনি তেলের অপকারিতাও রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণ তেল ব্যবহার করার মাধ্যমে চুলে খুশকির পরিমাণ বাড়ে যা থেকে ইনফেকশন তৈরি হতে পারে এবং অধিক পরিমাণ চুল পড়তে পারে। আবার তেলে যদি কোন প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো থাকে তাহলে চুলের গোড়া দুর্বল করে ফেলে এবং অধিক পরিমাণে চুল পড়তে থাকে ।তাই বেশি পরিমাণ তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল ব্যবহার করতে হবে এতে চুল মজবুত থাকবে এবং চুল পড়া বন্ধ থাকবে।

চুল পড়া বন্ধ করতে যেসব খাবার গুরুত্বপূর্ণ

আমরা হয়তো জানি না কিন্তু আমাদের চুল পড়া বন্ধ করার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ অনেক সময় দেখা যায় ভিটামিনের অভাবে মানুষের অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়ে। তাই চুল পড়া বন্ধ করতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া বা প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চুল পড়া বন্ধ করতে যেসব খাবার আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তা নিচে তুলে ধরা হলোঃ

প্রোটিন জাতীয় খাবারঃ

আমাদের চুলের অনেক পরিমাণ প্রোটিনের প্রয়োজন কারণ প্রোটিন আমাদের চুলকে বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই জরুরি যেমন
১. ডিম
২. মাছ
৩. মাংস
৪. ডাল
৫. দুধ ও তরল জাতীয় খাবার

ভিটামিন সি জাতীয় খাবারঃ

ভিটামিন সি আমাদের চুলকে মজবুত রাখতে সাহায্য করে তাই আমাদের ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যেমন
১. আমলকি
২. লেবু
৩. কমলা
৪. পেয়ার

আয়রন জাতীয় খাবারঃ

চুল পড়া বন্ধ করতে আয়রন জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আয়রন আমাদের চুলে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং চুল পড়া বন্ধ করে তাই আয়রন জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরি যেমন
১. মাংস
২. পালং শাক
৩. মটরশুঁটি ও বিভিন্ন শস্যজাতীয় খাবার

ভিটামিন ডি জাতীয় খাবারঃ

ভিটামিন ডি আমাদের চুলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের চুল পড়ার রোধ করতে ভিটামিন ডি এর ভূমিকা অনেক তাই ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খেতে হবে এবং সূর্যের আলোতেও অনেক পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় তাই সূর্যের আলো যেমন জরুরী তেমন ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরী যেমন
১. ডিম
২. দুধ
৩. মাছ

অতিরিক্ত চুল পড়া কোন রোগের লক্ষণ

অতিরিক্ত চুল পড়া যেমন অনেকগুলো কারণ রয়েছে তার মধ্যে কোন কোন রোগের লক্ষণের কারণে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে তাই আমাদের জেনে রাখা উচিত কোন রোগের কারণে অতিরিক্ত চুল পরে।
নিচে কয়েকটি রোগের নাম উল্লেখ করা হলো যেসব রোগের কারণে অতিরিক্ত চুল পড়ে থাকে।
১. থাইরয়েড রোগ
২. এলোপেসিয়া এরিয়াটা 
৩. লুপাস
৪. ক্যান্সার
৫. অপুষ্টি
৬. মাথার ত্বকের রোগ
৭. মানসিক চাপ

অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেসই তো প্রশ্ন ও উত্তর

অতিরিক্ত চুল করা বন্ধ করার সহজ উপায় কি?

আমরা জানি বর্তমানে পুরুষ ও মহিলা সবারই চুল পড়ার সমস্যাটি দেখা দিচ্ছে এবং এই সমস্যা থেকে নিস্তার পাওয়ার উপায় অনেকেরই জানা নেই? কিন্তু আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চুল পড়ে থাকে তাহলে এর থেকে বের হওয়ার সবথেকে সহজ উপায় হলো প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে চুলের যত্ন নেওয়া। যেমনঃ পেঁয়াজের রস, জবা ফু্‌ল, নিম পাতার রস ইত্যাদি।

হঠাৎ করে অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ কি?

আপনার কি হঠাৎ করে চুল পড়ছে এর কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না? আপনার যদি হঠাৎ করে চুল পড়ে তাহলে বুঝতে হবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এই সমস্যাটির কারণটি আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে। তবে হঠাৎ করে যদি চুল পড়ে এর কারণ হতে পারে অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে বা হরমোন পরিবর্তনের কারণে অথবা বংশগত কারণে অর্থাৎ জিনগত কারণে।

কি দিলে চুল পড়া কমে?

১. জবা ফুল তেলের সাথে গরম করে মাথাই মাসাজ করতে হবে।
২. নারিকেল তেল গরম করে মাথায় এবং চুলে মাসাজ করতে হবে।
৩. পেঁয়াজের রস মাথায় এবং চুলে মাসাজ করলে চুল পড়া কমে এবং নতুন চুল গজায়।
৪. নিম পাতার রস ও সাথে একটি প্রাকৃতিক তেল গরম করে মাসাজ করলে চুল পড়া কমে।

লেখকের মন্তব্যঃ অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার

অতিরিক্ত চুল পড়ার কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে আমরা এই আর্টিকেলে পুরোপুরি সম্পূর্ণরূপে আলোচনা করেছি। এবং আরো আলোচনা করেছি কোন কোন কারণে মূলত মানুষের অতিরিক্ত চুল পড়ে থাকে এবং কিভাবে এই চুল পড়া বন্ধ করা যায় তা সম্পর্কে। সাধারণত বর্তমানে মানুষের চুল পড়া সমস্যাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে কারণ বাজারে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা তৈরিকৃত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহারের জন্য মানুষের চুল দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং অতিরিক্ত চুল পড়ছে। 

তাই অতিরিক্ত চুল পড়া কমাতে রাসায়নিক দ্রব্য দ্বারা তৈরি হেয়ার প্রোডাক্টগুলো ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন এবং ভিটামিন ও প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করুন ও প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা তৈরি কৃত চুলের যত্নের উপাদান গুলি ব্যবহার করে চুল পড়া বন্ধ করুন। আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে হয়তো বুঝতে পেরেছেন আপনার চুল পরাবো কিভাবে বন্ধ করবেন এবং নতুন ভাবে কিভাবে চুল গজানোর উপাদান গুলি ব্যবহার করবেন। 

এবং আমাদের এই আর্টিকেলের সমস্ত তথ্য দ্বারা যদি আপনার উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্টে জানাবেন এবং আর্টিকেলের বাইরে কোন তথ্য জানতে কমেন্ট করুন অথবা এডমিনের সাথে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

পজিশন আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url